গণিতকে জয় করার মন্ত্র :

              গনিতকে জয় করার মন্ত্র   ।        

 গণিতকে জয় করার  মন্ত্র :  

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে আমাদের দেশে বেশ করে গণিতের উপর নজর  দেয়া হচ্ছে বেশ কয়েক বছর যাবৎ. যদিও গণিতের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তবে গণিত নিয়ে আমাদের বেশিরভাগের বিশেষ করে ব্যবসায়  শিক্ষা এবং সমাজ বিজ্ঞানের অন্য বিষয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাপক রকম রকমের ভীতি রয়েছে.  আবার গণিতে ভালো করার নিয়ে  আমাদের চারপাশে অনেক রকমের কথা প্রচলিত আছে. কেউ বলে হাই স্কুল লেভেলের গণিতের বইগুলো শেষ করলেই গণিতের ভয় দূর হবে. কেউ আবার বলেন বাজারের বইগুলো পড়লে ভালো উপকার পাওয়া যাবে. মোটামুটি সবারই অনেক রকম মতামত রয়েছে. কিন্তু যত রকম কথা কিংবা পদ্ধতি প্রচলিত তাতে কিন্তু সবার সমানভাবে উপকার হয় না. এ জন্য দরকার এমন একটু পদ্ধতি যাতে করে গণিতের ভয়কে চিরতরে জীবন থেকে মুছে ফেলা যায়.   আমাদের দেশে ছোটবেলা থেকেই অধিকাংশেরই গণিতের উপর এক রকমের নেগেটিভ মনোভাব চলে আসছে. গণিত বিষয়টি আসলে স্কুল কিংবা কলেজ লেভেলে তেমন কঠিন পর্যায়ের থাকে না. আবার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে যে রকম গণিতের সমস্যা আসে সেগুলোও তেমন অতি কঠিন পর্যায়ের না. তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে - সমস্যা কোথায় ? সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশে গণিত শেখানোর পদ্ধতিতে.    একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন যে, একটি গণিতের বই হাতে পাবার পর আমরা সাধারণত কি করি. স্কুল কিংবা কলেজ পর্যায়ে আমরা প্রথমেই শুরু করতাম অনুশীলনী থেকে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে. কিন্তু একটি বারও কি আমরা চিন্তা করেছি যে কেমন হতো যদি আমরা বাকি বিষয়গুলোর মতো আগে থিওরি কিংবা চ্যাপ্টার পড়বো তারপর সমস্যা সমাধান করবো. এই জিনিসটি যদি আমরা করতাম তাহলে মোটামুটি গণিতের ৬০% ভাগের বেশি ভয় আমাদের কেটে যেত. প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য তাই আমাদের এই কাজটি করতে হবে. প্রথমে যে বইগুলোর লিস্ট আছে সে বইগুলো কিনে পড়তে হবে. তারপর সমস্যা সমাধানে যেতে হবে. এটা অনেকটা আগে ম্যাপ দেখে কোনো জায়গায় যাওয়ার মতো. ম্যাপ না দেখলে কিন্তু যে কারোই নতুন কোনো জায়গায় যেতে সমস্যা হবে. তদ্রুপ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার গণিত সেক্শনের জন্য আগে আমাদের বই থেকে থিওরি কিংবা বেসিক আইডিয়া নিয়ে নিতে হবে.   তারপর করতে হবে সমস্যা সমাধানের কাজ. গণিতের থিওরি নিয়ে ভালো লিখা একটি বই হচ্ছে এস. এম. জাকির হোসাইন এর মনের পটে গণিতের রূপ বইটি. গণিতের থিওরি সম্পর্কে ভালো করে জানতে বইটি কাজে দিবে. তত্ত্বের সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা হয়ে গেলে খাইরুল'স বেসিক ম্যাথ বইটি দেখবেন এবং অনুশীলন করবেন. যে কোনো সমস্যা আগে পূর্ণরূপে সমাধান করা শিখতে হবে. তারপর আসে কি করে দ্রুত এবং অল্প সময়ের মধ্যে গণিতের সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় সেই বিষয়ের কথায়. জিআরই'র জন্য একটি শর্টকাট ম্যাথ বইয়েরও নাম আছে প্রথম পর্বে. শর্টকাট শেখার জন্য আরো একটি ভালো বই হচ্ছে Rapid Quantitative Aptitude - With Shortcuts & Tricks for Competitive Exams by Disha Experts.   তবে শর্টকাট দরকার আছে সত্য কিন্তু তার থেকে বেশি সত্য আমাদের নিজেদের গণিতের ক্যালকুলেশন স্পিড বাড়ানো. সারাদিন আমরা অনেক রকম লেনদেন করি. আর এই লেনদেনের ছোট কিংবা বড় যে রকম হিসেবের ক্ষেত্রে আমরা অধিকাংশই প্রবল রকমের ক্যালকুলেটর নির্ভর. আমার বাবাকে দেখতাম জীবনে ক্যালকুলেটর ছাড়াই মুখে মুখে এক বিয়ের খরচেরও হিসেবে করে ফেলতেন. এমনকি আমার বাবা কোনোদিন যে কোনো বড় হিসাবও একবারের বেশি দুইবার গণনা করতেন না.   অনেক সময় চিন্তা করতাম এই বিষয়টি নিয়ে. পরে বুঝলাম যে ছোট থেকে আমাদের এই রকম অনুশীলন করতে হবে. তাই আমি বলবো আজ থেকেই ক্যালকুলেটরকে আপনার জীবন থেকে বাদ দিন.   দৈন্দন্দিন হিসাব-নিকাশগুলো নিজে নিজে করার চেষ্টা করুন. এতে করে প্রথমে আপনার কষ্ট হবে বৈকি কিন্তু অন্তত ১ মাস করার পর দেখবেন আমি অনেক কিছু দ্রুত করতে পারছেন যা পরবর্তীতে আপনাকে ভালো স্কোর করতে সাহায্য করবে. অনেকের কাছেই এই বিষয়গুলো নতুন এবং আলাদা মনে হবে. কিন্তু সবসময় মনে রাখবেন, পরীক্ষা দেয়ার জন্য শুধু বই পড়লেই হয় না, নিজেকে উন্নত করতে হয়. প্রথম বইটি শেষ করতে হবে ১ মাসের মধ্যে. তারপর খাইরুল'স বই থেকে অনুশীলন করতে হবে ২ মাসের মধ্যে.   শর্টকাটের বইটি ব্যবহার করতে হবে খাইরুল'স বেসিক ম্যাথ বইটির পাশাপাশি. তিনটি বই যারা অনেক ফাস্ট কিংবা ফুল-টাইম দিতে পারবেন তারা ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে শেষ করবেন. আর যারা মোটামুটি সময় দিতে পারবেন তারা ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে. আর যারা ফুল-টাইম চাকরি কিংবা ফুল-টাইম পড়াশোনার পাশাপাশি গণিতের ভীতি দূর করতে চান তাদের জন্য ৮ থেকে ১০ মাস মেয়াদি প্ল্যান ভালো হবে.     

এত কিছু করার পর যদি বাড়তি অনুশীলন চান তাহলে আগারওয়াল এর বইটি দেখতে পারেন. তবে আপনার বেসিক ঠিক করলেই যে বই থেকেই প্রশ্ন আসুক না কেন আপনি পারবেন. এই বেসিক ঠিক করার জন্য এই পোস্টটি কিছুটা হলেও সাহায্য করবে আশা করছি ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন.